সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশি নাগরিক মৃত মাকে বুকফাটা আর্তনাদে শেষবিদায় জানিয়েছেন ভারতীয় নাগরিক মেয়ে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে ঘোজাডাঙ্গা জিরো পয়েন্টে মৃত মাকে শেষবিদায় জানান ভারতীয় মেয়ে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ভোমরা ইমিগ্রেশনের সামনে জিরো পয়েন্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উপস্থিতিতে মৃত মায়ের মরদেহের অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসা হয়। অন্যদিকে ভারতীয় নাগরিক মেয়েকে নিয়ে আসে বিএসএফ সদস্যরা। সেখানে এক হৃদয়বিদারক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেখানে মৃত মাকে জড়িয়ে মেয়ের কান্নার দৃশ্য দেখে উপস্থিত সবার চোখে পানি এসে যামৃত ওই নারীর নাম আসিয়া বেগম (৮০), তিনি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার দেবহাটা গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগে আসিয়া বেগম ভারতে বসবাসরত তার মেয়ের কাছ থেকে শেষবিদায় নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
আসিয়া বেগমের মেয়ে শরিফা বেগম। তিনি ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থানার হরিপুর গ্রামে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন। চার দশকেরও বেশি সময় আগে শরিফা বেগমের বিয়ে হয় ভারতে। বর্তমানে তিনি ভারতের নাগরিআসিয়া বেগমের নাতনি শেখ মেহেদী হাসান বলেন, মৃত্যুর আগে আমার দাদি আসিয়া বেগম ভারতে থাকা আমার ফুফুর কাছ থেকে শেষবিদায় নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। হঠাৎ করে গতকাল তিনি মারা যান। দাদির মৃত্যুর খবর শুনে ফুফু খুব কান্নাকাটি করছিল। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি, আমরাও বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করি। পররর্তীতে দুদেশের সীমান্ত বাহিনীর আন্তরিকতা এবং মানবিকতার কারণে দাদির শেষ বিদায়ে আমার ফুফু শামিল হতে পেরেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে দুদেশের সীমান্ত বাহিনী প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এ সময় বিজিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভোমরা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আফজাল হোসেন ও বিএসএফের ঘোজাডাঙ্গা কোম্পানি কমান্ডার এসি নবীন কুমার।
ভোমরা বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আফজাল হোসেন বলেন, বিজিবি ভোমরা ক্যাম্প কমান্ডের কাছে একটি মানবিক আবেদন আসে। তাতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সীমান্তে মারা যাওয়া মাকে শেষবারের দেখতে চান ভারতে বসবাস করা মেয়ে। আমি বিষয়টি সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হককে জানাই। তার অনুমতিতে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যদের জানালে তারাও এতে সম্মতি দেন। পরে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয় মেয়েকে।
তিনি আরও বলেন, আবেগঘন সেই মুহূর্তে উপস্থিত স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ ঘটনা দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করবে। সীমান্তে বসবাস করা দুদেশের মানুষের মধ্যেও বন্ধত্বপূর্ণ মানসিকতা তৈরি করবে।ক।য়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: শামসুদ্দোহা
শ্রীপুর,গাজীপুর
মোবাঃ +৮৮০ ১৭১৩৬৪৮৬৭১
Copyright © 2025 Dainik Somoyer Songbad. All rights reserved.