• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:১৯ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]

আরও ভয়াবহ হতে যাচ্ছে গাজার পরিস্থিতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। অনলাইন সংরক্ষণ / ২৪ জন দেখেছে
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ সংঘাতের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন করে সংঘর্ষের দিকে মোড় নিতে পারে। ইসরায়েল রিজার্ভ সেনা প্রস্তুত করেছে। এর মাধ্যমে তারা যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। হামাস যদি আগামী শনিবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরায়েল গাজায় আবার হামলা শুরু করবে—এমনই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে, যে কোনো মুহূর্তে সংঘর্ষ ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা এই সংঘাতে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত, ঘরবাড়ি হারিয়েছে। খাবার, পানির সংকট তো রয়েছেই, আশ্রয়কেন্দ্রেরও অভাব। এমন অবস্থায় আবার যুদ্ধ শুরু হলে গাজার বাসিন্দাদের জীবন আরও কঠিন হয়ে যাবে।হামাসের কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা আগামী শনিবার জিম্মি মুক্তির কথা বলেছিলেন। তবে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। হামাসের দাবি, ইসরায়েলের কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ হয়েছে। ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে দেয়নি এবং ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে

হামাস আরও জানায়, তারা চুক্তির শর্ত পূরণ করতে চাপ সৃষ্টি করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদি ইসরায়েল শর্ত মেনে চলে, তবে বন্দি বিনিময় এগিয়ে যাবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছেন, শনিবার দুপুরের মধ্যে হামাস যদি সব জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তবে গাজায় ‘নরক নেমে আসবে’। ট্রাম্পের এই বক্তব্যে উত্তেজনার পারদ আরও বেড়ে গেছে। এর পরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেছেন, যদি হামাস চুক্তির শর্ত মেনে না চলে, আমরা ‘তীব্র লড়াই’ শুরু করব। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে শুধু গাজা নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যও এক ভয়াবহ আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হতে পারে।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবেদল ফাত্তাহ আল-সিসি ও জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ গাজার ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা মেনে নিতে রাজি নন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত করা একেবারেই অসম্ভব।

এছাড়া, চীনও এই পরিকল্পনাকে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে। চীন জানিয়েছে, গাজা ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে বসবাস করা মানুষদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে।

গত ১৯ জানুয়ারি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকায় টানা ১৫ মাসের ইসরায়েলি হামলার লাগাম টানা হয়। শর্ত মেনে এরই মধ্যে পাঁচ দফায় জিম্মি ও বন্দি বিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল। তবে ক্ষমতা নেওয়ার পর ট্রাম্প জানান, গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। খালি করা হবে গাজা উপত্যকা। সেখানকার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।

গাজা খালি করার জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলছে জাতিসংঘ। কিন্তু ট্রাম্প অনড়। তিনি বলেন, জর্ডান ও মিশর যদি গাজা নিয়ে তার পরিকল্পনার আওতায় ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তিনি ‘সম্ভবত’ দেশগুলোর জন্য সহায়তা বন্ধ করে দেবেন।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনার জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মিশরে আরব দেশগুলোর জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সমর্থন গড়ে তুলতে কায়রো এ সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশ ট্রাম্পের প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ওপর জোর দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য: রয়টার্স, আলজাজিরা, এএফপি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

তথ্য ভান্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮