বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকীকে অবরুদ্ধ করেছেন ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অর্ধশত নেতা-কর্মী। বিদ্যালয় কমিটিতে নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারের নাম ১ নম্বরে না রাখায় তার অনুসারীরা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।বোর্ডের দুই কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও সাইফুলের মদদে নেতা-কর্মীরা এক ঘণ্টার বেশি সময় বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলে জানা গেছে। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে নেতা-কর্মীরা সটকে পড়েন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ একদল নেতা-কর্মী বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকীর কক্ষের সামনে জড়ো হয়ে হইচই করেন। এ সময় কয়েকজন নেতা বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষের ভেতরে ঢুকে তার কাছে জানতে চান, কেন জিয়া উদ্দিন সিকদারকে এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির তালিকায় ১ নম্বরে রাখা হয়নি? কেউ কেউ আবার টেবিল চাপড়ে চেয়ারম্যানকে হুমকিও দেন। খবর পেয়ে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটে গিয়ে দরজা খুলে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করেন। এ সময় সেখানে গণমাধ্যমকর্মী এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গেলে বিএনপি নেতা জিয়ার অনুসারীরা সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া বরিশাল নগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার তুষার দাবি করেন, তিনি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে কুশল বিনিময় করেছেন। চেয়ারম্যানকে ঘেরাও করা হয়েছে, এমনটা তিনি দেখেননি।
ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস তালুকদার বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাই। জিয়া ভাইয়ের কমিটি নিয়ে কোনো কিছু না। তবে জিয়া ভাইয়ের একটি কমিটি আছে। আমরা বলছি যে সম্ভব হলে জিয়া ভাইয়ের স্কুলের কমিটির বিষয়টা দেখবেন। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক সোলায়মান বলেন, আমি কেন বোর্ডে যাব? আমি কিছুই জানি না।
বোর্ডের সহকারী সচিব এবং কর্মচারী সংঘের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ওয়াহেদ বিদ্যালয়ের যে কমিটি দেওয়া হয়েছে, তাতে যার নাম ১ নম্বরে রাখা হয়েছে, তিনি ফ্যাসিস্ট। এ জন্য ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা গিয়ে বলেছেন যে ফ্যাসিস্ট কাউকে রাখা যাবে না। জিয়া ভাইকে রাখতে হবে। তিনি দাবি করেন, অবরুদ্ধ নয়, অনেক মানুষ ছিল, তাই এমন মনে হয়েছে।
এ ঘটনার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির প্যানেলে ২ নম্বরে রাখা হয়েছে বিএনপি নেতা জিয়া উদ্দিন সিকদারকে। ১ নম্বরে রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ. ছালামের স্ত্রীকে। একদল কর্মী জানতে চেয়েছে, কেন জিয়া ভাইয়ের নাম ২ নম্বরে গেল? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কে আহ্বায়ক হবেন, তা বিভাগীয় কমিশনার নির্ধারণ করে তালিকা পাঠান। এখানে আমাদের হাতে কিছুই নেই।
এ ব্যাপারে নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, বোর্ড চেয়ারম্যান কী লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করছে নাকি? আমি তো ঢাকায় আছি। চেয়ারম্যান যদি লাঞ্ছিতকারীদের নাম না বলে, তাহলে আমাদের কী করার। যারা গিয়েছিল আমি তাদের চিনি না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: শামসুদ্দোহা
শ্রীপুর,গাজীপুর
মোবাঃ +৮৮০ ১৭১৩৬৪৮৬৭১
Copyright © 2025 Dainik Somoyer Songbad. All rights reserved.