রংপুরের মিঠাপুকুরে শালমারা নদীকে অবৈধভাবে বিল ঘোষণা করে ইজারা দেয়ার ঘটনায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। নোটিশে শালমারা নদীর যথাযথ সংস্কারপূর্বক সিএস ম্যাপ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে নদীর মূলপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার জোরালো দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বেলা।বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জানিয়েছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিভাগীয় কমিশনার রংপুর বরাবর চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
বেলার পাঠানো নোটিসে নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে প্রদানকৃত ইজারা বাতিলের অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে নদীর শ্রেণি পরিবর্তনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহীতার আওতায় এনে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে সেখানে।
সেইসঙ্গে নোটিসে সম্প্রতি আদালতের আদেশে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক দেশের নদীর যে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেখানে ‘শালমারা’ নদীকে অন্তর্ভুক্ত করে এর যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে বেলা।
বেলার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ এলাকা দিয়ে ‘শালমারা’ নামক একটি নদী প্রবাহিত রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এ নদী একই উপজেলার ঘাঘট নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে একই উপজেলায় ভাংনি ইউনিয়নের কাশীনাথপুর গ্রামে কাফ্রিখাল নদের সাথে মিলিত হয়েছে। এ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ স্থানবিশেষে প্রায় ১০০ মিটার। স্থানীয়ভাবে নদীটি ভাটিতে চমকা নামেও পরিচিত।
সিএস ম্যাপে শালমারা নদী হিসেবে চিহ্নিত থাকলেও এ নদীকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে নদীর প্রায় ৫১ একর জমি ভিন্ন-ভিন্ন নামে ইজারা দেয়া হয়েছে। পায়রাবন্দ ইউনিয়নে নদীটিকে ‘শালমারা বিল’ নামে ৩৯ একর ৪০ শতক, বড় হজরতপুর ইউনিয়নে ‘শাল রিভার ছোট’ নামে ৪ একর ২০ শতক এবং ভাংনি ইউনিয়নে ‘বুড়াইল নদী’ নামে ১১ একর ৬৪ শতক ইজারা দেয়া হয়েছে।
অবৈধ এই ইজারার ফলে, প্রকৃত মৎস্যজীবী এ নদীতে মাছ ধরতে পারছে না ও কৃষক এ নদীর পানি ব্যবহার করে কৃষি কাজ সম্পন্ন করতে পারছে না। ইতিমধ্যে এলাকাবাসী এসব ইজারার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও নদী পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: শামসুদ্দোহা
শ্রীপুর,গাজীপুর
মোবাঃ +৮৮০ ১৭১৩৬৪৮৬৭১
Copyright © 2025 Dainik Somoyer Songbad. All rights reserved.