• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৬ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ খাতে অংশীদারত্বের ইঙ্গিত রাশিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। অনলাইন সংরক্ষণ / ২৫ জন দেখেছে
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে রাশিয়ার দখলে থাকা নতুন অঞ্চলগুলোর খনিজসম্পদ উন্নয়নে যৌথ কাজের সম্ভাবনা উন্মুক্ত রয়েছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়া ওয়ান টিভির সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, ডোনেস্ক ও লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিকসহ খেরসন ও জাপোরোজিয়ে অঞ্চলে মূল্যবান খনিজ সম্পদের বিশাল মজুদ রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ও রাশিয়ার অবস্থান

পুতিনের বক্তব্য এমন সময় এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে আলোচনায় রয়েছে। যদিও পুতিন মনে করেন, ইউক্রেনের প্রকৃত খনিজ সম্পদের পরিমাণ এখনও নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সম্পদের মজুদ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। তাই আমরা এগুলো উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দেব।

সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও সহযোগিতা

পুতিন স্পষ্ট করেছেন যে, রাশিয়া বিরল খনিজ সম্পদের খাতে মার্কিন বিনিয়োগ স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের মার্কিন বন্ধুদের যৌথ কাজের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে সহযোগিতার জন্য আমরা প্রস্তুত।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিরল খনিজ সম্পদের মালিকানায় থাকা রাশিয়া আধুনিক প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নতুন দখলকৃত অঞ্চলের খনিজ সম্পদও বৈশ্বিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

২০২২ সালে গণভোটের মাধ্যমে ডোনেস্ক, লুগানস্ক, খেরসন ও জাপোরোজিয়ে অঞ্চল রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। পশ্চিমা বিশ্ব এই দখলকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং রাশিয়ার বিনিয়োগ পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।

ফোর্বসের ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের মোট খনিজসম্পদের মূল্য প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যার অর্ধেকের বেশি দখলকৃত অঞ্চলে অবস্থিত।

এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্ভাব্য চুক্তি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ সম্পদ নিয়ে চলমান আলোচনা এবং রাশিয়ার বিনিয়োগ আহ্বান ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

ট্রাম্পের শান্তি চুক্তির প্রচেষ্টা

ট্রাম্প ও পুতিনের এই বক্তব্য এমন একসময় এসেছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন যে তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর জন্য একটি চুক্তি করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছি, আমার প্রতিনিধিরা তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে, এবং তারা (রাশিয়া) কিছু একটা করতে চায়। ট্রাম্প আরও বলেন, আমি চুক্তি করি। আমার পুরো জীবন চুক্তির মধ্য দিয়ে কেটেছে। আমি জানি কখন কেউ চুক্তি করতে চায় আর কখন চায় না।

ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবি

ইউক্রেন আগেও বলেছে যে, যেকোনো চুক্তির আগে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়। তবে ট্রাম্প এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ট্রাম্পকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছেন যে পুতিনকে বিশ্বাস করা যায়, তখন তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, রাশিয়ার জন্য চুক্তি করা লাভজনক হবে এবং এটি দেশকে ইতিবাচকভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা করবে।

তিনি আরও বলেন, আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যে তিনি (পুতিন) চুক্তি করতে চান। হয়তো আমি ভুল, কিন্তু আমার বিশ্বাস, তিনি চুক্তি করতে চান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

তথ্য ভান্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮