অবাক করার মতো একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতে। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের নন্দলেতা গ্রামের ললিত পাতিদার। তার মুখের ৯৫ শতাংশের বেশি অংশ বড় লোমে ঢাকা, যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে লোমশ মুখের অধিকারী হিসেবে পরিচিত করেছে।
ললিতের এই বিশেষত্বের কারণ এক বিরল রোগ, যার নাম হাইপারট্রিকোসিস। এ রোগ সাধারণত ‘ওয়েরেউলফ সিনড্রোম’ নামে পরিচিত। এই রোগের ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অস্বাভাবিক লোম বৃদ্ধি পায়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে এই রোগের মাত্র ৫০টি নথিভুক্তের ঘটনা রয়েছে।
ললিতের বাবা-মা প্রথমে তার চেহারায় কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেননি। তবে ছয়-সাত বছর বয়সের মধ্যে তার মুখসহ শরীরের অন্যান্য অংশে বড় বড় লোম গজাতে শুরু করে। এটি স্বাভাবিক না হওয়ায় চারপাশের মানুষ কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। অনেকেই তাকে ভয় পেতেন, আবার কেউবা মজা করতেন। স্কুল ও সমাজে তাকে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।
প্রথমদিকে মানুষের কৌতূহল ও বিরূপ মন্তব্যে অস্বস্তিতে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ললিত নিজেকে মেনে নিয়েছেন। এখন তিনি সমাজের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন। তার একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। সেখানে তিনি নিজের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিক শেয়ার করেন।
সম্প্রতি ইতালির মিলানে একটি টেলিভিশন শোতে অংশ নেন ললিত। সেখানেই বিশেষজ্ঞরা তার মুখের লোমের ঘনত্ব মেপে দেখেন এবং নিশ্চিত করেন, তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে লোমশ মুখের অধিকারী। এই স্বীকৃতি পেয়ে ললিত উচ্ছ্বসিত।
ললিতের গল্প শুধু একটি বিশ্বরেকর্ডের গল্প নয়, এটি নিজেকে গ্রহণ করার ও সাহসের গল্প। যেকোনো শারীরিক পার্থক্য সত্ত্বেও কীভাবে নিজের জায়গা করে নেওয়া যায়, সেটাই তিনি প্রমাণ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, মানুষ বাহ্যিক চেহারা দিয়ে নয়, বরং তার কর্ম ও মানসিকতার মাধ্যমে পরিচিতি পায়।
সূত্র: গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, হিন্দুস্তান টাইমস