২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত সাড়ে আটশ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। শহীদ এবং আহত পরিবারের সদস্যদের হাতে ঈদ সামগ্রিক তুলে দেওয়া হবে। আগামী মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) থেকে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
রোববার (১৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস কাবের আবদুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান জেডআরএফ’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহতদের সরকারের দেওয়া তালিকা সাড়ে আটশ পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এসব পরিবারকে ঈদ সামগ্রী দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জুলাই আগস্ট বিপ্লবে আত্মদানকারী অকুতোভয় ছাত্রজনতাকে যাদের দুর্বার প্রতিরোধে অবসান হয়েছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের। সহমর্মিতা জানাই যারা এখনো স্বৈরশাসকের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাই যারা দু চোখ হারিয়ে একেবারে অন্ধ কিংবা এক চোখ হারিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন তাদের। ফাউন্ডেশনের প থেকে আমাদের চিকিৎসকরা ইতোমধ্যেই আহতদের সুচিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছেন এবং সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে এই যোদ্ধাদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকরা।
অধ্যাপক ডোনার বলেন, চলছে পবিত্র মাহে রমজান। আর কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে। আমরা যারা সুস্থ আছি ভালো আছি তারা হয়তো আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপন করব। কিন্তু জুলাই আগস্ট বিপ্লবে আমরা যাদের চিরদিনের জন্য হারিয়েছি তারা কেউ আমার ভাই কেউ আমার সন্তান। সেই ভাই হারা এবং সন্তান হারা স্বজনদের পাশে দাঁড়াতে চায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। ভাগাভাগি করে নিতে চায় তাদের আনন্দ-বেদনা। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে আমরা পৌঁছে যেতে চাই প্রতিটি শহীদ পরিবারের কাছে। ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনায় শহীদ পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে যাবে আমাদের সদস্যরা। দুর্যোগ-সংকটে, বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে যে সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত রাখতে এই উদ্যোগ। আগামী ১৮ মার্চ থেকে শুরু হবে আমাদের এই উদ্যোগ।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের চাঁদা এবং অনুদান আর্তমানবতার সেবায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা খরাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দুর্বিপাকের সময় এই প্রতিষ্ঠান দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিগত জুলাই আগস্ট বিপ্লবের সময় গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্র জনতাকে চিকিৎসা দিয়েছে। অতি সম্প্রতি ফেনী এলাকায় যে ভয়াবহ বন্যা হয়ে গেল সেখানেও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ এবং চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করেছে এই প্রতিষ্ঠান। আগামী দিনে ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের সদস্যরা যেকোনো বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়াবে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফ এর পরিচালক ও ঈদ সামগ্রিক বিতরণ আয়োজনের সদস্য সচিব ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন, পরিচালক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিশ সিমকী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম, ড. শেখ মনিরুদ্দিন জুয়েল, আমিরুল ইসলাম কাগজি, সাঈদ খানসহ ফাউন্ডেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।