বাতাসে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিলো নেশা, কারা যে ডাকিলো পিছে, বসন্ত এসে গেছে। নাহ! গান গাইছি না। আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন, বাংলার বসন্তের প্রথম দিন।
শীতের তীব্রতা আর কুয়াশার অবগুণ্ঠন সরে এরই মাঝে দখিন দুয়ার থেকে বইতে শুরু করেছে ফাগুনের মৃদুমন্দ হাওয়া। পলাশ-শিমুল ডালে এরই মধ্যে রক্তিম আগুন জ্বলে উঠেছে দিকে দিকে। কোকিল তাই সঙ্গিনীর প্রণয় আকাঙ্ক্ষায় কুহু কুহু গাইতে শুরু করেছে। মৌমাছিরা মিলন ঘটাচ্ছে ফুলে ফুলে। ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় গভীর গোপনে এ যেন ভালোবাসারই ডাক।কবি বলেছিলেন, ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। কিন্তু বাংলার বসন্তে ফুল ফুটেছে। শীতার্ত বৃক্ষের পাতা ঝরে গিয়ে নতুন জীবনের আভাস ফুটে উঠছে ডালে ডালে। মাটির গভীর থেকেও যেন নতুন জীবনের হাতছানি ফাগুনের দুয়ারে দুয়ারে বার্তা দিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথায়, ‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়, ফুল ফুটেছে বনে বনে, শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায়, ফাল্গুনী মোর মন বনে’। আসলে বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। বসন্তে গাছে গাছে নতুন পাতা আসে। ডালে ডালে কোকিল। রঙিন ফুলে প্রকৃতি সুশোভিত হয়ে ওঠে। এই সময়ে বাতাসে ফুলের রেণু ছড়ায়। নতুন প্রাণের উন্মোচনে প্রকৃতি হয়ে ওঠে বর্ণিল। ভালোবাসা যেভাবে মানুষের মনকে রাঙিয়ে তোলে। ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই মানুষসহ প্রাণ-প্রকৃতির সব সদস্যেরই জন্ম ও বেড়ে ওঠা। ঠিক এখানেই ভালোবাসায় বসন্তে এক হয়ে ওঠে।
বসন্তের এই প্রথম দিনে শীতের হিমেল নাজুকতা ভেঙে জেগে উঠেছে প্রকৃতির সমস্ত প্রাণ। দিকে দিকে সেই জাগরণের সাড়া পড়ে গেছে। সারা দেশের মতো এই ঢাকাতেও কোকিল তার সুরেলা কুহু কুহু ডাকে প্রণয়ের আহ্বান করতে পিছিয়ে নেই। সারা বছরের স্বপ্ন জমিয়ে সে যেন ভালোবাসার মৌসুমে এসে ঢেলে দিচ্ছে তার প্রেমময় সুর। সেই সুর প্রকৃতির সঙ্গে দোলা দেয় মানুষের মনকেও।