• ঢাকা, বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]

যাত্রীসেবায় ভাড়াসন্ত্রাস

ডেস্ক রিপোর্ট। অনলাইন সংরক্ষণ / ২৭ জন দেখেছে
আপডেট : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

রাজধানী ঢাকার সড়কে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোয় বাড়তি ভাড়া আদায় অথবা ‘ভাড়াসন্ত্রাস’ চর্চার বিষয়টি নতুন নয়। রোববার কালবেলায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, প্রতিদিন রাজধানীতে যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া বাবদ প্রায় ২ কোটি টাকা পকেটে পুরছে পরিবহনগুলো। এটিকে ‘ভাড়াসন্ত্রাস’ ছাড়া আর কীইবা বলা যেতে পারে!

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ওয়েবিলের দোহাই দিয়ে এমনটি করা হচ্ছে। অথচ এ পদ্ধতি নিষিদ্ধ রয়েছে প্রায় তিন বছর। এর পরিবর্তে যাত্রীসেবায় তখন আনা হয় ই-টিকেটিং পদ্ধতি। কিন্তু সে নিয়মের কোনো প্রকারের তোয়াক্কা না করে দিব্যি চলছে মানুষের পকেট কাটার কাজ! অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এসব দেখার কোনো প্রতিষ্ঠান নেই দেশে। কী বিস্ময়কর!প্রকাশিত খবরের ভাষ্যে, রাজধানীর একাধিক রুটে চলা যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট ভাড়া থেকে ৫-১০ টাকা করে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০ টাকার ভাড়ার জায়গায় নেওয়া হচ্ছে ১৫; কখনো ১০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা। যাত্রীদের একরকমের জিম্মি করে এ বাড়তি ভাড়া আদায় করছে তারা। পরিবহনগুলোর মধ্যে সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া ভাড়ার তালিকার চিহ্ন নেই। শুধু তাই নয়, পরিবহনশ্রমিকদের এসব তৎপরতায় যাত্রীরা প্রশ্ন করলে কিংবা আপত্তি জানালে তাদের পড়তে হয় বেকায়দায়। বাগবিতণ্ডা থেকে শুরু করে নানা অপমান-হেনস্তার শিকার হতে হয়। এমনকি বাড়তি ভাড়ার ব্যাপারে তাদের পক্ষ থেকে যাত্রীদের এমনও বলা হয়, ‘আপনাকে এত জবাব দিতে পারব না, যাত্রীর অভাব নেই। না পোষালে নেমে যান!’ কারণ জানতে চাওয়া হলে এও বলা হয়, ‘ওয়েবিল অনুসারে ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ আছে মালিকের। তারা রেট কইরা ভাড়া মিলায়ে দিছে। উনারা (মালিক) যে ভাড়া নিতে বলেছে, আমরা সেই ভাড়াই নিতাছি।’ তার মানে সরকারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের করা নিয়ম মেনে না চলার সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে জড়িত খোদ পরিবহনমালিকরা।

আমরা জানি, ঢাকা মহানগরীর বাসগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায়ে নানা সমালোচনার পর ২০২২ সালের ১০ আগস্ট বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) তৎকালীন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে ওয়েবিল প্রথা সম্পূর্ণ বাতিল করে। চালু করা হয় ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে দূরত্ব অনুপাতে ভাড়া আদায় পদ্ধতি। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরই সেই ই-টিকেটিং পদ্ধতিকে পাশ কাটিয়ে ফের ওয়েবিল প্রথায় যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় শুরু হয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, সড়কের যাত্রীবাহী পরিবহনের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি কি পরিবহনমালিকদের বানানো নিয়মে চলবে? তারা কি সরকারি সংস্থার করা নিয়মনীতির অবজ্ঞা করতে পারেন? আমরা জানি, এ সবকিছুই তারা করতে পারেন না। কারণ এ অধিকার তাদের কেউ দেয়নি। তাহলে দিনের পর দিন প্রকাশ্যে কীভাবে যাত্রীর পকেট কাটার এই হীন কাজ চলছে—এটাই প্রশ্ন।

আমরা মনে করি, রাজধানীর পরিবহনগুলোয় যাত্রীসেবার নামে যে ভাড়া নৈরাজ্য চলছে, অনতিবিলম্বে তা বন্ধ হওয়া আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে গণপরিবহনে নগদ টাকার লেনদেন বন্ধ হওয়া দরকার। যাত্রীবাহী বাসগুলোকে কাউন্টারভিত্তিক ও ই-টিকেটিংয়ের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্টদের আইন প্রয়োগে কঠোরপন্থা অবলম্বন করতে হবে। বলাবাহুল্য, সড়কের বিশৃঙ্খলার পেছনে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বদের উদাসীনতা ও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি প্রকটভাবে লক্ষণীয়। আমাদের প্রত্যাশা, যাত্রীভোগান্তি কমাতে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত তৎপর হবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

তথ্য ভান্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮